MatiharMatihar

    Subscribe to Updates

    Get the latest creative news from FooBar about art, design and business.

    What's Hot

    পুনর্জীবনে ফিরে ॥ নাসরীন জাহান

    মার্চ ১৪, ২০২৫

    জীবিত ও মৃত: রবীন্দ্রদৃষ্টিতে সমাজে নারীর অবস্থান ॥ জান্নাতুল যূথী

    জানুয়ারি ২১, ২০২৫

    বামিহাল সাহিত্য পুরস্কার-২০২৪ পাচ্ছেন ৭ জন

    ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
    Facebook Twitter Instagram
    MatiharMatihar
    • প্রচ্ছদ
    • প্রবন্ধ
    • উপন্যাস
    • ছোটগল্প
    • কবিতা
    • গান
    • সাক্ষাৎকার
    • সমাজচিন্তা
    • অন্যান্য
      • দুস্প্রাপ্য রচনা
      • শিশুসাহিত্য
    Facebook Twitter Instagram
    MatiharMatihar
    Home»কবিতা»নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ॥ ফজলুল হক সৈকত
    কবিতা

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ॥ ফজলুল হক সৈকত

    এপ্রিল ১৬, ২০২৩
    Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Pinterest Email

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
    তখন আমি সম্ভবত তেরো বছরের —
    করিম কাকাদের সাথে মার্বেল খেলি
    মালেক কাকাদের সাথে চালাই ক্যারমের স্ট্রাইকার
    বৃষ্টি এলে উঠানে মাটি দিয়ে বাঁধ এঁটে ধরি ডানকিনে মাছ
    একবার এক কাকার সাথে খুব ঝগড়া হয়েছিল—
    তার নাম বলতে চাই না।

    তখন আমি সম্ভবত পনেরো বছরের
    রাতের বেলা অন্ধকারের ভেতর জানালার পাশে হাজির হলো
    চোর ব্যাটা।
    তারপর তুমুল ঘটনা
    তার নাম বলতে চাই না।

    তখন আমি সম্ভবত সেকেন্ডারি পরীক্ষা দিয়েছি
    বাড়িতে ডাকাত পড়লো—লুট হলো সবকিছু
    তারপর আমার রাজনীতিবিদ বাবা ধীরে ধীরে চুপসে গেলেন
    কার জন্য? —
    তার নাম বলতে চাই না।

    তখন আমি সম্ভবত অনার্স থার্ড ইয়ারে
    এক রাত্রে পার্কের বেঞ্চে শুয়ে কাটাল প্রাণের বন্ধু জুয়েল পাগলা
    একটি মেয়ে তাকে ভালোবাসবে না বলেছিল
    সেই মেয়েটির নাম, স্বভাব সব আমার জানা, তবু
    তার নাম বলতে চাই না।

    তখন আমি সম্ভবত খুব বড়ো স্বপ্ন দেখেছিলাম
    লেখাপড়া শেষে সুন্দর চাকরি জীবনের
    কিন্তু কন্যাদায়গ্রস্ত এক শিক্ষকের নেশায়
    কেটে গেলো আমার ঘুড়ির নীল নীল সুতো
    তার নাম বলতে চাই না।

    তখন আমি সম্ভবত একটি পরিবর্তনের কথা বলছিলাম
    কতগুলো মানুষ ঘোরের মধ্যে বসে আমার কথা শুনেছে
    অন্তত কত শত সকালে ও বিকেলে
    কিন্তু, তারপর…যা হবার, তাই হয়েছে…
    কার কারণে?
    তার নাম বলতে চাই না।

    এইবেলা
    বোবা বিকেলে শিলা বৃষ্টি নামে শূন্য আখড়ায়
    পিপীলিকার মতো হেঁটে যাও তুমি চাঁদের রুপোলি স্বপ্নে
    নুপূর-বাঁধা পায়ে মাড়িয়ে যাও শামুকের সকল শিশু
    রমনার পাড়ে চলে প্যাকেটের ভাগাভাগি, তোমার অগোচরে
    আমি তোমার নাম বলতে চাই না।

    সম্পাদক সমীপেষু
    এক সাহিত্য সম্পাদকের সাথে দেখা করার জন্য প্রথম দিন
    তিনঘন্টা বসে থাকার পর তার প্রিয়মুখ উদয় হলো
    কুশল বিনিময় ছাড়া কোনো কথা হয়নি।
    তারপর বহুদিন হাতে ধরে লেখা শিখিয়েছেন
    আমি তার নাম বলতে চাই না।

    এক সাহিত্য সম্পাদক আমাকে বলেছিলেন:
    ‘রবীন্দ্রনাথ নিয়ে লিখতে গেলে আরো দশ বছর পড়তে হবে তাঁকে।’
    তারপরের বিশ বছর কেটে গেছে কিন্তু আমার দুর্বলতা কাটলো না আজও
    সেই সম্পাদক ছিলেন আমার খুব প্রিয়
    আমি তার নাম বলতে চাই না।
    এক সাহিত্য সম্পাদক আমার একটি লেখা বাম হাতে নিয়ে
    না পড়েই ফিরিয়ে দিয়ে বলেছিলেন: ‘এ ধরনের লেখা আমরা ছাপি না।;
    তার ডান হাতে তখন ধোঁয়াওঠা চায়ের পেয়ালা
    চা পানের সামান্য নিমন্ত্রণও করেননি
    এগারো বছরের মাথায় আমি তার পতন দেখেছি
    আমি তার নাম বলতে চাই না।

    এক সাহিত্য সম্পাদক পেছনে বর্ধমান হাউজের সন্ধ্যা হয়ে-আসা
    বাতাসকে দুহাতে সরিয়ে আমাকে বলেছিলেন: ‘জীবনানন্দ বিষয়ে কোনো লেখা আছে?’
    ঝোলা ব্যাগ থেকে হাতে লেখা কাগজের ৯টি পৃষ্ঠা বাড়িয়ে ধরতেই বলেছিলেন:
    ‘যদিও সূচিপত্র চূড়ান্ত হয়ে গেছে, তবু
    এটিই হবে শেষ লেখা।’
    আমি তার নাম বলতে চাই না।

    এক সাহিত্য সম্পাদক চায়ের টেবিলে বসে বললেন:
    ‘কিছু আইডিয়া দেন, কাগজটাকে জাতে তুলতে চাই।’
    আমি প্রবাসী এক কবিকে নিয়ে পাতা করতে বললাম
    আর বললাম বাঁশি ও বৈঠা নিয়ে আলাদা আলাদা সংখ্যা করতে
    অন্য একটি পত্রিকা তারই পরামর্শে বাঁশি-বৈঠা সংখ্যা প্রকাশ করে
    তারই কাগজে ছাপা হয় প্রবাসীর কবিকে নিবেদিত বিশেষ সংখ্যা
    আমার কোনো লেখা ছাপা হয়নি তাতে
    যদিও তিনি আমাকে দিয়ে লিখিয়েছিলেন প্রচ্ছদ রচনা
    আমি তার নাম বলতে চাই না।

    তবে তার নাম বলবো না
    এক সাহিত্য সম্পাদক কম বয়সে মাঝে মাঝে কালো চশমায়
    ঢেকে রাখতেন সম্ভাবনাময় দৃষ্টি —
    কম কথা বলতেন। একদিন আমাকে ফোনে বললেন: ‘লেখা দিও। তবে শোনো পয়সা দেবো না কোনো।’
    তিনি লোক ভালো —
    তবে তার নাম বলবো না।

    এক সাহিত্য সম্পাদক, এখনও মাঝে মাঝে ফোন করেন
    অন্য কোনো কারণে না —শুধু লেখা চাওয়ার জন্য
    কী বিষয়ে লিখতে হবে, কত শব্দে, কবে দিতে হবে বলে
    ফোন রেখে দেন। তার পরিচয় দিয়ে দিতে পারি
    কারণ বয়সে সে অনেক ছোট আমার চেয়ে, যদিও জানাশোনায়
    বেশ খানিকটা লম্বা —সামান্য শরীরে কী করে যে ঢেকে রাখে
    জ্ঞানের বহর—ভেবে পাই না
    তবে তার নাম বলবো না।

    এক সাহিত্য সম্পাদকের সাথে হঠাৎ দেখা সোহরাওয়ার্দীতে
    ঠোঁটে সিগারেট চেপে বললেন: ‘আরে, কই যান? আমারে লইয়া যান সাথে।’
    তাকে নামিয়ে দেই এলিফ্যান্ট রোডে, দুপুরের তপ্ত রোদে
    শুকিয়ে-যাওয়া লোকটি
    বিদায়ের সময় বললেন: ‘একটা ভালো লেখা দেবেন। ছাপবো।’
    আমি বিব্রত হয়ে বললাম: ‘আমি ভালো লেখা লিখি না।’
    তার নাম আজ খুব মনে পড়ছে
    তবে তার নাম বলবো না।

    একবার এক সাহিত্য সম্পাদক বললেন: ‘আপনাকে
    কালো তালিকাভুক্ত করেছি। আর কখনো লিখবেন না।’
    আমি শুধু ‘আচ্ছা’ বলে রেখে দিলাম। অনেকদিন পর তার সাথে
    দেখা হলে কী একটা প্রয়োজনে ফোন নম্বর চাইলাম
    তিনি ভণিতা ছাড়াই বললেন: ‘আমার নাম্বার তো
    সবার কাছেই আছে।’
    কেজি দরে যে কাগজ বিকোয় না বাজারে তার
    একটি পাতার সম্পাদকের অহংকারের অন্ধকারের
    আজও কোনো মানে খুঁজে পাই না।
    তবে তার নাম বলবো না।

    একবার এক সাহিত্য সম্পাদক ফোন করেই মেকি একটা হাসি
    গিলে ফেলে বললেন: ‘আরে বেশি বেশি লিখুন। আর হ্যাঁ, টাকা তো দেবোই। খবর হলে সবার আগে আপনাকে জানাবো।’ তিনি আগে কিছু টাকা দিয়েছেন বটে—চেকে নয় ক্যাশে
    আমার ধারণা, জানি না মিথ্যাও হতে পারে,
    আমার নামে টাকা তুলে তিনি পকেটে রেখে দেন। আর
    আমাকে বলেন: ‘লেখেন। টাকাটা মনে করেন ব্যাংকেই আছে।’
    তবে তার নাম বলবো না।

    এখন তার নাম বলবো না
    কলেজের তৃতীয় বিজ্ঞানভবনের দোতলায় দুপুরের তপ্ত রোদ থেকে
    শরীর নামিয়ে বসে থাকতো তিনটি মেয়ে, প্রায় প্রতিদিন
    আমরা মাঠের মাঝখানে পামট্রির নিচে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতাম,
    মনে হতো ওরা সব রাজকন্যা আর আমরা সবে পাতিহাঁস।
    একদিন বন্ধুদের একজন, কে যেন বললো:
    ‘কার সাহস আছে, ওদের সাথে গিয়ে কথা বলতে পারে, নাম জেনে আসতে পারে?’
    তখনো আমরা মেয়েদের সাথে ঠিকমতো কথা বলাটা আয়ত্ব করতে পারিনি —
    লজ্জায় অথবা ভয়ে পা কাঁপতো —এক পা এগিয়ে তিন পা পিছিয়ে যেতাম,
    তো আমি বললাম: ‘পারবো।’ তারপর কীভাবে যে সিঁড়ি ভেঙে দোতলায় গিয়ে
    তাদের সামনে দাঁড়িয়ে আলাপ-পরিচয় দিয়ে ও খানিকটা নিয়ে
    ফিরে এলাম, আজও ভাবলে শরীর কেমন কেমন করে,
    তাদের মধ্যে যে মেয়েটি পাতলা ফ্রেমের কালো চশমা পড়তো
    তার চোখের তারা, যেখানটায় তারাদের মেলা বসতো, দেখা যেতো
    ফ্রেমের ওপর দিয়ে —যেন নদীর ওপারের তালগাছে ঝুলে-থাকা বাবুই পাখির বাসা—
    তার ডাকনাম, লিপস্টিকের রঙ, বেণী-করা-চুল
    এখনও স্পষ্ট মনে করতে পারি
    কিন্তু এখন তার নাম বলবো না।

    নাম-না-বলা লোকটি
    প্রাইমারির পাঠ চুকিয়ে তখন হাইস্কুলের বারান্দায় রেখেছি পা,
    পা পিছলে-পড়ার মতো ভেজা মাটি, বাঁশের বাতার বেড়া আর
    টিনের চালের ঘরের পুবদিকের কোণে চেয়ারের হাতলে হাত রেখে
    যে-লোকটি হাফশার্টের বোতামের ঘরে ঘরে সাজাতেন জীবনের আলো,
    ফুলশর্টে শেখাতেন টিকে থাকার কৌশল—
    আজ, মহা-সংকটের কালে—দাঁড়িয়ে-থাকার ঘরবন্দী-সংগ্রামে
    সেই নাম-না-বলা লোকটিকে মনে পড়ছে খুব।

    নাম মনে পড়ে তার
    পশ্চিমপাড়ার হলুদ রোদগুলো নেমে আসে পুবের বাগানের নিচের পুকুরে
    রিকশায় দোলে হুড ওঠানামার খেলা। চুলের বেণীতে খেলে কানামাছি
    ভোঁ ভোঁ—সিলসিলায় দাঁড়িয়ে থাকে যুগলের ফুরিয়ে-যাওয়া সন্ধ্যাগুলো।
    সুন্দরীদের ভিড়ে কাঁপে বাতাসের শিস; কবিতার ঢঙে পুকুরের কোণে
    ভাসে অনন্ত জিজ্ঞাসা—মেয়েটি আনকোরা মনে তুলে দেয় দেহের বাতার
    বাদামি বরণ—রোকেয়া হলের পেছনে, আলের ওপর জমে থাকে তার
    নাম ও ঠিকানা; নাম মনে পড়ে তার—কী এক স্বর্গীয় সন্ধিক্ষণে!

    তার নাম বলতে চাই না
    একবার, যৌবনের প্রথমপ্রহরের দিকে হবে
    একজনকে বলেছিলাম: ‘আমি ইংরেজি পড়বো’। — শুনে
    সে বলেছিল: ‘তুই পড়বি ইংরেজি, পারবি না।’
    সকালবেলার রোদ্দুরের মতো তার কথাকে সত্য ভেবেছিলাম
    এখানে, আমি তার নাম বলতে চাই না।

    একবার, তখনো চন্দ্রকলার মাঠে কিংবা স্কুলের পাশের রাস্তায়
    বীরেনের মেজ ছেলে ফেরি করে ফিরতো বোম্বাই বুট
    একজন বলেছিল: ‘আমরা তিনবন্ধু এখন থেকে ডানহাতে ঘড়ি পড়বো —
    যতদিন বাঁচি এক থাকবো আমরা।’
    বুট দাঁতে চেপে আমরা বাম হাত থেকে ডান হাতে জুড়েছিলাম
    কালো কালারের ক্যাসিও।
    সেই বন্ধু তার কথা থেকে পরে সরে গিয়েছে —
    এখানে, আমি তার নাম বলতে চাই না।

    একবার, তখনো আমরা অন্যের গাছ থেকে পেয়ারা পেড়ে খাই
    দলবেঁধে লাফঝাপ করি হোজা নদীর ভরাবুকে
    নদীতে তখনো চলতো গুনটানা নৌকা
    রমনারা অনায়াসে সাঁতার কেটে এপার-ওপার করতো
    একজন সাধু পুরুষকে দেখেছিলাম —
    কমলা খালার সাথে দেখা করার জন্য সন্ধ্যার প্রতীক্ষায় থাকতে
    রিফ্যুজিপাড়ার পাশেই যে নিবিড় কলাবাগানে অভিসারে যেতেন কমলা খালা
    তার গাঁ-ঘেষা পশ্চিমের পয়স্তি জমিটার মালিকানা ছিল আমাদের
    এখানে, আমি তার নাম বলতে চাই না।

    একবার, সম্ভবত ওরহান পামুকের নোবেল পাওয়ার পরের বছর হবে
    বিকেলের বিষণ্নতাকে তখনো ওর স্যালাইন কিংবা কলেরার
    টীকা নিতে দেখা যায়নি
    পাখিরা তখনো ফিরছিল নিজ নিজ প্রিয়-পাখির সাথে
    একজন বলেছিল: স্মৃতিসৌধের চারপাশের সমস্ত শোভা
    আমার জন্য বরাদ্দ করবে —
    এমনকি শহীদ মিনারে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পর
    বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে আমার চিরনিদ্রার ব্যবস্থা করবে
    আমার মৃত্যুর অনেক আগেই তাকে স্বেচ্ছায় চাতুরিতে অবসরে যেতে দেখলাম
    এখানে, আমি তার নাম বলতে চাই না।

    একবার, লক্ষীপুর কিংবা মহিষবাথানে, ঠিক মনে নেই
    খুব ঝড় উঠেছিল
    আমন চালের গরম ভাতের সাথে লাল গোলালুর মিতালি
    কিংবা দ্বন্দ্বের মতো অথবা জানালার পর্দা ছিটকে খুলে পড়ার মতো
    মিনতিভরা বাতাসের ঝড়
    একজনকে বলেছিলাম: ‘পাশে কেউ শুনছে না তো?’
    তার বিস্ময়ভরা চোখ, শাড়ির বেসামাল আঁচল—সব মনে পড়ে
    এখানে, আমি তার নাম বলতে চাই না।

    একবার, শাদা শাদা মেঘেদের বদলে তখন আকাশে জায়গা করে নিয়েছে জগতের
    যত্তোসব অন্ধকার—রাস্তা কেটে কেটে চারিদিকে শুরু হয়ে গেছে দোতলা সড়কের
    সবুজ বাতির ভিত্তিপ্রস্তরের প্রস্তুতিপর্ব
    একজনকে বলেছিলাম: ‘আপনার মতে সকলেরই কি এক মতে থাকা উচিত?’
    পরিণত বয়সে মত-বদল-করা লোকটি শুধু সামান্য হেসে জানিয়েছিল:
    ‘তুমি থাকো তোমার অবস্থানে।’
    এখানে, আমি তার নাম বলতে চাই না।

    বিশ্বমন্দার প্রভাব পড়েছে মুদির দোকানে
    বিশ্বমন্দার প্রভাব পড়েছে মুদির দোকানে
    বেচাকেনা চলছে—ক্রেতাদের আনাগোনাও কম নয়
    সবুজ মোড়কের ম্যাংগোবার, ঝাল-লবণ-মেশানো প্যাকেট বাদাম, গ্রিন-টি
    পেস্ট-সবুজে টুথব্রাশের চাহিদা আছে; কোথাও কোথাও সবুজ আপেল, সুগার-ফ্রি
    আদার দুধ চা, মোটাদাঁতের গোলাপি চিরুনী, রেশমি চুড়ি আর দাঁড়ি-কামানোর
    ওয়ান-টাইম রেজার কিনছে কেউ কেউ।
    যারা একটু ভিতু, তাদের সদাইপাতির তালিকায় জায়গা জুড়ে নিয়েছে
    চকোলেট, রুমাল ও কালো কালির কলম।

    পাখির ঝরে-পড়া পালকেরা মিছিল করে করে জড়ো হচ্ছে সাহারা ও
    রাজস্থানে; হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের রোদ-না-পড়া বারান্দার ঝুলগুলো ভুলের
    পাতা সরিয়ে আজও ফেরি করে ফেরে
    দেখে-আসা কোনো সুখের সংসার!
    কখনো কখনো সুখের ধূলিকণা বাউলা বাতাসে উড়ে এসে পড়ে
    মাশকারা-মাখা চোখের কোণায়—লেফট-রাইট খেলতে খেলতে।
    কালশিরা-পড়া ক্যান্টিনে বসে সাহসীরা চুমুক দেয় লেবুর ঠাণ্ডা শরবতে
    হাত রাখে তালুতে ও জঙ্ঘায়—
    কারো কারো বা ব্লাড-পেশার বাড়ে, হুশিয়ারি আসে কার্ডিয়াকের
    ডেঙ্গু রোগীর চেয়ে হু হু করে বাড়ছে প্রতিদিন
    পার্কে-হাঁটা প্রেসক্রিপশনধারী মানুষ!

    দিব্যচোখে দূরপ্রাচ্যের সাম্য: শান্তি আর প্রগতির ক্যানভাসে আজ
    ভাঙা-সোভিয়েট; চারিদিকে চিৎকার—কাশ্মির! কাশ্মির!
    জাতিতে সব রোহিঙ্গা, ভূখণ্ডে ভূখণ্ডে আরাকান।

    রাই সরিষার সিন ও সিনারিও কিংবা শৈশবের গমের ক্ষেতে পাখি-তাড়ানোর ভোরে লুঙ্গির কোঁচায় আজও কি
    নেতিয়ে পড়ে হাতে-ভাজা বালুমাখা মুড়ির দল?
    কার বাসায় কে পাড়ে ডিম?
    সিনেমাপাড়ার বস্তিতে আগুন
    হলুদ শিখায় ভেসে ওঠে রূপনগরের অট্টালিকার স্বপ্ন!

    প্রগতির পেছনে জমে আছে—ডুবে আছে সব ফূর্তি!
    এ-জাহান মিথুনবিরত—
    সততা দিয়ে নির্মিত হয়েছে কোন সভ্যতা, কোনকালে!
    কবে ফূর্তি বিক্রি হয়েছে মুদির দোকানে?

    আনরিড চোখের ভাষা
    তোমার আনরিড চেখের ভাষায় ক্লিক করে দেখি পাতাগুলো
    বড় স্যাঁতসেঁতে- ফ্রিজে রাখা কাগজের মতো
    অশ্রুর নিবিড় দাগে লেখাগুলো ঝাপসা হয়ে আছে
    কথাগুলো না-বাংলা, না-ইংরেজি ভাষায় আঁকা
    কাগজের ভাঁজ খুলতে খুলতে মাউস আটকে পড়ে শাড়ির ভাঁজে
    আলমিরাতে সাজিয়ে-রাখা যেন কতকাল
    প্রতি ভাঁজে ফাটলের আহ্বান অথচ কারো কানে তোলেনি তা
    কোনোকালে কোনো আওয়াজ
    কপালের ডান দিকে একটা অস্পষ্ট রেখা ভাঁজ করতে করতে
    তুমি প্রশ্ন ছুঁড়ে দাও ফ্লোরে- ‘কিভাবে পরিচয়?’
    আমি বারবার ক্লিক করি তোমার আনরিড চোখের ভাষায় আর
    তুমি শাড়ির না-খোলা ভাঁজে মন রেখে বলো-
    ‘তাহলে ভালোই আছো।’
    চিকের ফ্রাই আর ঠাণ্ডা কোকের বোতল ঘিরে মাছিদের
    হাহাকার আর আনরিড ফোল্ডার হাতে নিয়ে তুমি ও আমি
    চোখ রাখি অল্প চেনা অল্প জানা কোনো এক বসুন্ধরায়
    মন কেমন করা দুপুরবেলায়।

    Featured ফজলুল হক সৈকত
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email

    সম্পর্কিত লেখা

    সিঙ্গুরের সুরতহাল ও অন্যান্য ॥ মাজরুল ইসলাম

    অক্টোবর ২৭, ২০২৪

    আবু আফজাল সালেহের তিনটি কবিতা

    মে ৯, ২০২৪

    তাশনুভা তাহরীনের দুটি কবিতা

    এপ্রিল ৩০, ২০২৪

    ১ Comment

    1. আমিনুল ইসলাম on এপ্রিল ২০, ২০২৩ ১২:৪৫ অপরাহ্ণ

      ফজলুল হক সৈকতের কবিতাগুলো পড়লাম। বিষয় পরিস্কার, ভাষা সাবলীল। কোথাও জোরজবস্তি কিংবা কষ্টকল্পনা নেই। তারপরও কবিতায় আড়াল আছে। ভালো লেগেছে। সবচেয়েভালো রেগেছে “সম্পাদক সমীপেষু’’ কবিতাটি। কবিতাটি দারুণ সুন্দর।

      Reply

    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    দৃশ্যান্তের পর ॥ মাজরুল ইসলাম

    নভেম্বর ২৪, ২০২৩

    লিওনেল মেসি ॥ প্রিতময় সেন

    নভেম্বর ৬, ২০২৩

    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-মন্বন্তর: নাট্যচর্চায় বিজন ভট্টাচার্য ॥ তপন মণ্ডল

    আগস্ট ৫, ২০২৩

    বসন্ত রাগ ॥ কালিদাস ভদ্র

    জুলাই ১৬, ২০২৩

    একাকীত্বের সব দহন তোমাকে দিলাম ॥ দীপংকর গৌতম

    জুলাই ৪, ২০২৩
    Stay In Touch
    • Facebook
    • Twitter
    • Pinterest
    • Instagram
    • YouTube
    • Vimeo
    Don't Miss

    পুনর্জীবনে ফিরে ॥ নাসরীন জাহান

    ছোটগল্প মার্চ ১৪, ২০২৫

    ফিসফিস ধ্বনি, এই বাড়িডা না? ধুস আওলা ঝাউলা লাগতাছে… লোকটার দুই পা ফেটে রক্ত ঝরছে।…

    জীবিত ও মৃত: রবীন্দ্রদৃষ্টিতে সমাজে নারীর অবস্থান ॥ জান্নাতুল যূথী

    জানুয়ারি ২১, ২০২৫

    বামিহাল সাহিত্য পুরস্কার-২০২৪ পাচ্ছেন ৭ জন

    ডিসেম্বর ২১, ২০২৪

    চিন্তাসূত্র সাহিত্য পুরস্কার গ্রহণ করলেন ৪ গুণীজন

    ডিসেম্বর ১৫, ২০২৪

    Subscribe to Updates

    Get the latest creative news from SmartMag about art & design.

    সম্পাদক: জান্নাতুল যূথী ইমেইল: jannatuljuthi646@gmail.com

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.