MatiharMatihar

    Subscribe to Updates

    Get the latest creative news from FooBar about art, design and business.

    What's Hot

    পুনর্জীবনে ফিরে ॥ নাসরীন জাহান

    মার্চ ১৪, ২০২৫

    জীবিত ও মৃত: রবীন্দ্রদৃষ্টিতে সমাজে নারীর অবস্থান ॥ জান্নাতুল যূথী

    জানুয়ারি ২১, ২০২৫

    বামিহাল সাহিত্য পুরস্কার-২০২৪ পাচ্ছেন ৭ জন

    ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
    Facebook Twitter Instagram
    MatiharMatihar
    • প্রচ্ছদ
    • প্রবন্ধ
    • উপন্যাস
    • ছোটগল্প
    • কবিতা
    • গান
    • সাক্ষাৎকার
    • সমাজচিন্তা
    • অন্যান্য
      • দুস্প্রাপ্য রচনা
      • শিশুসাহিত্য
    Facebook Twitter Instagram
    MatiharMatihar
    Home»অন্যান্য»এক ডাকাবুকো সাংবাদিকের গল্প ॥ কৃশানু মজুমদার
    অন্যান্য

    এক ডাকাবুকো সাংবাদিকের গল্প ॥ কৃশানু মজুমদার

    এপ্রিল ২, ২০২৩
    Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Pinterest Email

    কবীর সুমনের বই ‘নিশানের নাম তাপসী মালিক’। রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমি আন্দোলন নিয়েই লেখা বইটি। সেই বইয়ে বহুবার সাংবাদিক সুকুমার মিত্রের উল্লেখ আছে। সুমন লিখেছেন, ‘বাংলার ঘরে ঘরে সুকুমার মিত্রের ছবি থাকা উচিত।’

    শুধু বইয়ের পাতায় নয়, ধর্মতলায় ১৪ মার্চের এক সভায় কবীর সুমনকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ”নন্দীগ্রামে একটা সুকুমার মিত্র মারা গেলে, আমি চারটে হার্মাদ মারব। আর আজ এখানে যাঁরা উপস্থিত আছেন, তাঁরা প্রত্যেকে একটা করে হার্মাদ মারবেন।”

    জমি আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতি ফুটছে তখন। দারুণ এক সময়। সেই সময়ে দৈনিক স্টেটসম্যান কাগজকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল সুকুমার মিত্র। আমাদের সবার প্রিয় সুকুমারদা। সুকুমারদা হিরের টুকরো এক সাংবাদিক। যে কোনও সংবাদমাধ্যমের সম্পদ। আমার সাংবাদিক জীবনের সেই প্রভাত বেলায় সুকুমারদাকে খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। ওরকম ডাকাবুকো সাংবাদিক আমি সত্যি দেখিনি। দেখতে ছোটখাটো চেহারার। কিন্তু বুকের খাঁচাটা অনেক বড়। ভয়ডরহীন বলতে যা বোঝায় তাই। স্বভাবে অন্তর্মুখী। একগুঁয়ে। যেটা করবে বলে ঠিক করে, তা করেই ছাড়ে। প্রেসের জন্য যে জায়গা বরাদ্দ, সুকুমারদা সেখানে কোনওদিন বসেনি। সুকুমারদার রিপোর্টে মাটির গন্ধ লেগে থাকত। রিপোর্ট পড়ে চোখের সামনে ছবি দেখতে পেতাম। খুব মনে পড়ছে একদিনের কথা। আমাদের চিফ রিপোর্টার শ্রদ্ধেয় আশিস ঘোষ কপালে একাধিক ভাঁজ নিয়ে বলছিলেন, ”সুকুমারের সঙ্গে কিছুতেই যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। নন্দীগ্রামে এখন অপারেশন চলছে। ছেলেটা যে কী করছে খুব চিন্তায় রয়েছি।”

    যাঁর জন্য আশিস ঘোষের এত চিন্তা, সেই সুকুমার মিত্র ১৪ মার্চের অপারেশনের সময়ে কী করছিল? বাঙ্কার হিসেবে খালপাড়কে ব্যবহার করছে গুলি থেকে বাঁচার জন্য। জ্যামার লাগানো থাকায় ফোনে যোগাযোগ করতে পারছিল না অফিসের সঙ্গে। সকালে একবার চিফ রিপোর্টারের সঙ্গে কথা হয়। তার পরে ঘন্টা সাতেক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। যখন যে ভাবে যোগাযোগ করতে পেরেছে অফিসের সঙ্গে, সেই মতো নন্দীগ্রামের টাটকা, তাজা খবর দিয়ে গিয়েছে। ক্রমশ নিজের জায়গা থেকে সরে সরে যাচ্ছিল সুকুমারদা। কারণ ঘটনাস্থল থেকে সরে না গেলে মাথায়-পিঠে গুলি লাগার আশঙ্কা ছিল। খেজুরি থেকে নন্দীগ্রামে গুলি চালাতে চালাতে ঢুকছিল দুর্বৃত্তরা। আর সুকুমারদা হলদিয়ার দিকে সরে যাচ্ছিল। সেই খবর পরের দিন দৈনিক স্টেটসম্যানের প্রথম পাতায় যখন প্রকাশিত হল, তখন সত্যি সত্যিই গুলি-বারুদের গন্ধ পেয়েছিলাম। একমাত্র সাংবাদিক হিসেবে নন্দীগ্রামে উপস্থিত ছিল সুকুমারদা। সেই সময়ের স্বারাষ্ট্রসচিব প্রসাদরঞ্জন রায় রাইটার্স বিল্ডিংয়ে ব্রিফিংয়ের সময় এ কথা জানিয়েছিলেন। আর আমরা তো সুকুমারদার সাহসী সাংবাদিকতার সাক্ষীই ছিলাম।

    বাস থেকে তাদের নামিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় ছয় কিলোমিটার রাস্তা আল পথে পেরিয়ে হরিপুর পৌঁছয় সুকুমারদা।

    সুকুমারদার রিপোর্টিং স্টাইল অনন্য ছিল। সবার সঙ্গে মিলবে না তা। সবাই তিন তারা বা পাঁচ তারা হোটেলে উঠে রিপোর্টিংয়ে বেরোয়। সুকুমারদা অন্য মেরুর মানুষ। মানুষের সঙ্গে মিশে, তাঁদের বাড়িতে থেকে, লোকের ভিড়ে মিশে গিয়েই রিপোর্ট লিখত। সিঙ্গুর আন্দোলনের সময়ে প্রায় ছ’ মাস স্থানীয় নিউ উজ্জ্বল সংঘ ক্লাবই ছিল সুকুমারদার ঠিকানা। সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল এক ফ্রি লান্সার ফটোগ্রাফারকে। সেই ক্লাবের বিচালির গাদার উপরে চট বিছিয়ে থাকত সুকুমারদা। তাপসী মালিকের দাদা সোমনাথ মালিক শতরঞ্চি এনে দিয়েছিলেন। দিনের বেলা বাইরে খেত সুকুমারদা। আর রাতে তাপসী মালিকের দাদা খাবার পৌঁছে দিতেন। ক্লাবে থাকার জন্য হোটেল বিল উঠত না। অফিসের খরচও বেঁচে যেত। আর অফিস প্রতিদিন পেত একেকটা বিস্ফোরক এক্সক্লুসিভ। সিঙ্গুরে থাকতে থাকতে হাতের তালুর মতো সব জেনে গিয়েছিল সুকুমারদা।

    এর মধ্যেই নন্দীগ্রামে স্বতঃস্ফুর্তভাবে কৃষক অভ্যুত্থান হয়। গুলি চলে। খবর পেয়ে কাগজের চিফ রিপোর্টার আশিসদা আর তাঁর ঘনিষ্ঠ এক রিপোর্টার নন্দীগ্রামে যান। সেখানে তখন আগুন জ্বলছে। উন্নয়নের গল্প লেখা প্রেস এসে উপস্থিত হয়েছে মনে করে চিফ রিপোর্টারের উপরে চড়াও হয় কয়েকজন। মার হজম করতে হয় তাঁকে। চোখ থেকে খুলে পড়ে যায় চশমা। পরে অবশ্য চিফ রিপোর্টার যার হাতে প্রহৃত হয়েছিলেন, সেই তিনিই পা ধরে ক্ষমা চান। সেটাও হয়েছিল সুকুমারদার জন্যই। নন্দীগ্রামে হারিয়ে আসা চশমা চিফ রিপোর্টারকে খুঁজে এনে দিয়েছিল সুকুমারদা|

    ওই রকম অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি নিজের চোখে দেখার পরে চিফ রিপোর্টার বাধ্য হয়ে ডেকে নেন তাঁর হাতের আসল তাসকে। ফোন যায় সুকুমারদার কাছে। নতুন অ্যাসাইনমেন্ট নন্দীগ্রাম। কিন্তু ওই যে আগেই বলেছি সুকুমারদা একগুঁয়ে প্রকৃতির মানুষ। প্রথমটায় রাগত হয়েই বলে দেয়, সিঙ্গুর ছেড়ে কিছুতেই নন্দীগ্রাম যাবে না। সিঙ্গুর যে তৈরি হচ্ছে বড় সড় আন্দোলনের জন্য তার আঁচ পেয়ে গিয়েছে অভিজ্ঞ সুকুমারদার সাংবাদিক সত্ত্বা। সেই কারণেই প্রথমটায় জমি ছেড়ে চলে আসায় অনীহা ছিল। অবশেষে কাগজের এডিটরের নির্দেশে ব্যাগপত্তর গুছিয়ে হাওড়া স্টেশন থেকে মেচেদা যাওয়ার ট্রেনে উঠে বসে। সেখান থেকে মহিষাদল।

    নন্দীগ্রাম-অধ্যায়ে সুকুমারদার প্রথম রিপোর্টটাই ছিল সবাইকে নাড়িয়ে দেওয়ার মতো। স্বাধীনতা সংগ্রামী সুশীল ধারা ক্যারিশম্যাটিক ফিগার মহিষাদলে। তাঁর সেই ক্যারিশ্মাকে কাজে লাগাতেন স্বয়ং লক্ষ্ণণ শেঠ। বিভিন্ন অরাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে সুশীল ধারার ভাবমূর্তিকে ব্যবহার করতেন তিনি। সবটাই ছিল ভোটবাক্সর দিকে তাকিয়ে। বর্তমান কাগজের প্রতি বিশেষ দুর্বলতা ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামী সুশীল ধারার। বর্তমান সংবাদপত্রের সম্পাদক বরুণ সেনগুপ্তর সঙ্গে এমার্জেন্সির সময়ে কারারুদ্ধ হয়েছিলেন তিনি।

    এদিকে নন্দীগ্রাম উত্তপ্ত তখন। রাস্তা কেটে দেওয়া হয়েছে। তা নিয়েই সুশীল ধারাকে জিজ্ঞাসা করে বসলেন সুকুমারদা। জানতে চাইলেন নন্দীগ্রামের এই জমি আন্দোলনের প্রতি তাঁর সমর্থন আছে কিনা। সুকুমারদার এহেন প্রশ্ন শুনে হেসে ফেলেন সুশীল ধারা। সুকুমারদার প্রতিবেদনেই পড়েছি, সুশীল ধারা বলছেন, নন্দীগ্রাম রাস্তা কেটেছে এতে আর নতুনত্ব কী আছে? ৪২-এর আন্দোলনের সময়ে নন্দীগ্রাম রাস্তা কেটেছে। তেভাগা আন্দোলনের সময়ে রাস্তা কাটা হয়েছে। ১৯৮২ সালে উন্নয়নের দাবিতে আন্দোলন হয়েছিল। সেই সময়ও রাস্তা কাটা হয়। নন্দীগ্রাম থানার আরেক নাম দারোগাপোড়া থানা। আগস্ট আন্দোলনের সময়ে থানার ভিতরে দারোগাকে রেখে জ্যান্ত পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাই নন্দীগ্রাম থানার আরেক নাম দারোগা পোড়া থানা। আন্দোলনকে সমর্থন করেন তিনি। যেতে চান নন্দীগ্রাম। সুশীল ধারাকে নিয়ে অ্যাঙ্কর স্টোরি লিখেছিল সুকুমারদা।

    সেই স্টোরিতে কেঁপে গিয়েছিল মেদিনীপুর। পরের দিন সকালে সুশীল ধারার বাড়িতে চলে আসেন লক্ষ্ণণ শেঠের স্ত্রী তমালিকা পণ্ডা শেঠ। কবি হিসেবে তাঁর আবার সুনাম ছিল। সকাল সকাল বেশ সেজেগুজে তমালিকা শেঠ হাজির সুশীল ধারার বাড়িতে। প্রবীণ স্বাধীনতা সংগ্রামীর উদ্দেশে বলে ওঠেন, দৈনিক স্টেটসম্যানের সাংবাদিক সুকুমার মিত্র যা লিখেছেন তা সর্বৈব মিথ্যা। সুশীল ধারা সেই বিষয়ে একটি মন্তব্যও করেননি, সবটাই সুকুমারদার মস্তিষ্কপ্রসূত, এই মর্মে একটি চিঠি দিতে হবে। দৈনিক স্টেটসম্যানের পুরো রিপোর্ট পড়ার পরে সুশীল ধারার চোখে আগুন খেলে যায়। তমালিকাকে উদ্দেশ করে বলেন, “আমি যা বলেছি তাই লিখেছে সুকুমার।” তমালিকা পালটা বলে ওঠেন, “তাহলে আপনাকে আমরা দেখবো কেন?” এই বাকবিতণ্ডা সুকুমারদার সামনেই হচ্ছিল। খবরের মশলা হাতের সামনে। দৈনিক স্টেটসম্যান পেল আরও একটা এক্সক্লুসিভ। এরকম একের পর এক এক্সক্লুসিভ দিয়ে গিয়েছে সুকুমারদা। তার বিনিময়ে নিজের প্রাণ বাজি রেখেছিল বললেও অত্যুক্তি করা হবে না।

    নন্দীগ্রামে যাওয়ার সময়ে দুর্বৃত্ত বাহিনী রাস্তা অবরোধ করে। সুকুমারদার সহযাত্রী ছিল কলকাতা টিভির এক সাংবাদিক। তাঁর হাতে ছিল দামী ক্যামেরা। সেটা দেখতে পেয়েই দুর্বৃত্তদের এক জন তা ছিনিয়ে নেয়। সপাটে চড় মারে সেই সাংবাদিককে। চড়ের আঘাতের পর থেকেই সেই সাংবাদিক বেচারী কানে কম শোনেন। ক্যামেরা আছড়ে ফেলে ভেঙে দেওয়া হয়। পরে কবীর সুমন ৫৫ হাজার টাকা দিয়ে তা কিনে দেন সেই সাংবাদিককে। সুকুমারদা আর তাঁর ফ্রি লান্স ফটোগ্রাফার পরিচয় গোপন করেন। বাস থেকে তাদের নামিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় ছয় কিলোমিটার রাস্তা আল পথে পেরিয়ে হরিপুর পৌঁছয় সুকুমারদা। সেখানে গিয়ে দেখে একটা কুশপুত্তলিকা পোড়ানোর তোড়জোর শুরু হয়েছে। সেই কুশপুত্তলিকার গায়ে কোট পরানো। হাতে সিগারেট। আসলে সেই কুশপুত্তলিকা লক্ষ্ণণ শেঠের। তাতে অগ্নিসংযোগ করা হবে। সেই সব গনগনে রিপোর্টিং দৈনিক স্টেটসম্যানের প্রচার বাড়িয়ে দিয়েছিল।

    এডিটর প্রতিবাদ জানাননি। যে সাংবাদিকের হাত থেকে বেরিয়েছে একের পর এক আগুনে খবর, তাঁর সমর্থনে দাঁড়ালেন না এডিটর।

    হাথরসের দুই মহিলা সাংবিদকের পরিচয় এখন আমরা সবাই জানি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছিল কয়েকমাস আগে। পুলিশ হাতরসের নির্যাতিতার গ্রামে ঢুকতে দেবে না। আর এবিপি নিউজের মহিলা সাংবাদিক গলা উঁচিয়ে বলেই চলেছেন, ‘‘অর্ডার কোথায়? গ্রামে ঢুকতে না দেওয়ার অর্ডার কোথায়?”

    যে সময়ের ঘটনা বলছি, তখন সোশ্যাল মিডিয়ার দৌরাত্ম্য আজকের মতো ছিল না। থাকলে সুকুমারদার সাহসিকতাও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ত। কিছু না পাওয়া সুকুমারদা হয়তো অনেক কিছুই পেয়ে যেত|

    যাই হোক ফিরি আসল গল্পে| খেজুরিতে অপারেশন হবে। সেই খবর পেয়ে ভাঙাবেড়া দিয়ে যাওয়ার সময়ে পুলিশের নাকা চেকিংয়ের সামনে পড়ে সুকুমারদা। এসডিপিও এগরা বিশ্বজিত দাস কিছুতেই যেতে দেবেন না সুকুমারদাকে। আর সুকুমারদা যাবেই। পুলিশকে সটান জিজ্ঞাসা করে বসে, “প্রেসের লোক খেজুরি যেতে পারবে না, তার অর্ডার আছে? ওখানে অপারেশন চলবে, আর পুলিশ নাকা লাগিয়ে অপারেশনে সাহায্য করবে?” পুলিশের মুখের উপর সুকুমারদা সটান বলে দিয়েছিল, “আপনি আমাকে আটকাতে পারবেন না। কাল সকালে কাগজটা দেখে নেবেন।” তার পরের দিন দৈনিক স্টেটসম্যানের পাতায় খবর বেরিয়েছিল, আতঙ্কে ম্যানগ্রোভ অরন্যে হাজার খানেক মানুষ লুকিয়ে রয়েছে। পুলিশকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে খেয়া পেরিয়ে আতঙ্কে লুকিয়ে থাকা মানুষের ছবি তুলেছিল সুকুমারদা। তার পর চার ঘন্টার রাস্তা পেরিয়ে মহিষাদল থেকে সেই ছবি পাঠিয়েছিল দৈনিক স্টেটসম্যানের দপ্তরে।

    সেই সময়ে লক্ষ্ণণ শেঠ-সহ আট বাম নেতা অভিযোগ এনেছিলেন, সুকুমার মিত্র সাংবাদিকের ছদ্মবেশে মাওবাদীদের অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করছে। কলকাতার প্রায় সব খবরের কাগজেই এই খবর প্রকাশিত হয়েছিল। চার নম্বরে আরএসপির অমৃত মাইতি সই করেছিলেন প্রথমটায়। পরে প্রতিবাদ করে তিনি বলেছিলেন, সুকুমার মিত্র মাওবাদীদের অস্ত্র সরবরাহ করছেন, এটা আমার জানা ছিল না। আমি বিশ্বাস করি না সুকুমার মিত্র মাওবাদীদের আর্মস সাপ্লাই করে বা মাওবাদীদের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ আছে।

    সুকুমারদাকে নিয়ে বলতে বসলে শেষ করা যাবে না। নন্দীগ্রামের কুৎসিত সত্য তুলে ধরার জন্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার (Karpoor Chandra Kulish International award in Print journalism) পেয়েছিল সুকুমারদা। কিন্তু ১৪ মার্চ গণহত্যার বার্ষিকীতে উপস্থিত থাকতে হবে নন্দীগ্রামে, সেই কারণে নিজে সম্মান নিতে না গিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছিল সহকর্মীকে।

    এহেন সুকুমারদাকেই একদিন চোখের জল ফেলে চলে আসতে হয়েছিল দৈনিক স্টেটসম্যান ছেড়ে। দুই সহকর্মী পিছনে লেগেছিল সুকুমারদার। তার খবরের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। সবটাই হয়েছিল এডিটরের সামনে। এডিটর প্রতিবাদ জানাননি। যে সাংবাদিকের হাত থেকে বেরিয়েছে একের পর এক আগুনে খবর, তাঁর সমর্থনে দাঁড়ালেন না এডিটর। উলটে সুকুমারদাকে প্রমাণ দিতে হয়েছিল, তার খবর ঠিক।

    Featured কৃষাণু মজুমদার
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email

    সম্পর্কিত লেখা

    বামিহাল সাহিত্য পুরস্কার-২০২৪ পাচ্ছেন ৭ জন

    ডিসেম্বর ২১, ২০২৪

    চিন্তাসূত্র সাহিত্য পুরস্কার গ্রহণ করলেন ৪ গুণীজন

    ডিসেম্বর ১৫, ২০২৪

    বগুড়া লেখক চক্র পুরস্কার-২০২৪ পাচ্ছেন অনীক মাহমুদসহ ৬ জন

    নভেম্বর ১৪, ২০২৪

    ১ Comment

    1. Subhransu Roy on এপ্রিল ২, ২০২৩ ১:৩৫ অপরাহ্ণ

      আবার পড়লাম লেখাটি। আরো অনেকবার পড়া প্রয়োজন মনে হয়।

      Reply

    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    দৃশ্যান্তের পর ॥ মাজরুল ইসলাম

    নভেম্বর ২৪, ২০২৩

    লিওনেল মেসি ॥ প্রিতময় সেন

    নভেম্বর ৬, ২০২৩

    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-মন্বন্তর: নাট্যচর্চায় বিজন ভট্টাচার্য ॥ তপন মণ্ডল

    আগস্ট ৫, ২০২৩

    বসন্ত রাগ ॥ কালিদাস ভদ্র

    জুলাই ১৬, ২০২৩

    একাকীত্বের সব দহন তোমাকে দিলাম ॥ দীপংকর গৌতম

    জুলাই ৪, ২০২৩
    Stay In Touch
    • Facebook
    • Twitter
    • Pinterest
    • Instagram
    • YouTube
    • Vimeo
    Don't Miss

    পুনর্জীবনে ফিরে ॥ নাসরীন জাহান

    ছোটগল্প মার্চ ১৪, ২০২৫

    ফিসফিস ধ্বনি, এই বাড়িডা না? ধুস আওলা ঝাউলা লাগতাছে… লোকটার দুই পা ফেটে রক্ত ঝরছে।…

    জীবিত ও মৃত: রবীন্দ্রদৃষ্টিতে সমাজে নারীর অবস্থান ॥ জান্নাতুল যূথী

    জানুয়ারি ২১, ২০২৫

    বামিহাল সাহিত্য পুরস্কার-২০২৪ পাচ্ছেন ৭ জন

    ডিসেম্বর ২১, ২০২৪

    চিন্তাসূত্র সাহিত্য পুরস্কার গ্রহণ করলেন ৪ গুণীজন

    ডিসেম্বর ১৫, ২০২৪

    Subscribe to Updates

    Get the latest creative news from SmartMag about art & design.

    সম্পাদক: জান্নাতুল যূথী ইমেইল: jannatuljuthi646@gmail.com

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.